হয়তো

সূচনা ঘোষাল


হয়তো...
ভীষণ সহজে দাম-দর করে কিনে ফেলেছিস,
রাস্তায় ধারে দাঁড়িয়ে থাকা কোনো নারীদেহকে
বেশ কায়দা করে নিয়েও এসেছিস নিজের
বিলাসবহুল বহুতলের ফ্ল্যাটে...
জড়োসড়ো হয়ে দাঁড়ানো মেয়েটার বয়স,
খুব বেশী হলে ওই তেরো কী চোদ্দো...
তোর বয়স আমার হিসাবে পঁয়তাল্লিস এখন!
বেশ পটু হাতে কাছে টেনে নিলি ওই নরম মাংসপিন্ডটাকে
তোর স্পর্শের আঘাতে বিদ্ধ হতে থাকল অপ্রাপ্ত নারীমন
জানিয়ে দিলি, পৌরষত্ব কী, পুরুষের আকর্ষণ কেবল শরীর
যৌনসুখে মাতাল হয়েছিলিস তুই সেই রাতে
তোর অত্যাচারে চাপা পড়ে ছিল কচি মেয়েটার আর্তনাদ
তোর... প্রেমিকা তখন ফোনের ওপারে ভালোবাসা জানাতে প্রস্তুত
তুই তখন আদর নামক বিষে আক্রান্ত!
তোর নামী প্রেমিকা জানলোই না তোর চাহিদা কিসে মেটে
আবারও তুই খেলে চললি আর একটা
প্রাপ্ত বয়স্কা নারীমনের সাথে, দিনের পর দিন
সেও যে তোকে শরীর দেয়নি তা নয়,
দিয়েছে... হয়তো সুখী হসনি তুই তাতে...
সকাল হতে ক্ষতবিক্ষত যোনী দেখে ভয়ে,
কেঁদে ওঠে ওই বছর তেরোর মেয়েটা!
তুই তখন আরাম ঘুমে ব্যাঘাত শুনে ধমকে উঠলি
“ন্যাকামি মারাস না,এটা তোদের পেশা”
কথাটা শুনে কেমন যেন চুপ হল মেয়েটা
সত্যিই তো! এটা তো ওর পেশা...
বাড়িতে না খেতে পেয়ে মরতে বসা পেটের সংখ্যা চার!
বাবার জুয়ার টাকা জোগাড়ে আর ওদের
পেট বাঁচাতে বাবা তাকে বেচে দিলো এই নরকে!
তাও তো সেই ঘটনা একবছর হয়ে গেল!
প্রথম প্রথম বাড়ির জন্য আর শরীরের যন্ত্রনায় ছটফটাতো মন
এখন সবটা সয়ে গেছে...
এও জানে একটুপর এই বাবুও কটা টাকা
মুখের ওপর ছুঁড়ে দিয়ে তাড়িয়ে দেবে!
মেয়েটার গন্তব্য হবে আবার সেই স্যাঁতস্যাতে গলি আর রাস্তার ধার
আর... তুই... ঘুম থেকে উঠে শুরু করবি অভিনয়
সৎ থাকার অভিনয়, না ঠকানোর অভিনয়
বাড়িতে... প্রেমিকার কাছে সব জায়গায়
প্রয়োজন হবে তোর দক্ষতাযুক্ত অভিনয়ের!
তারপর রাত হলে আবার যাবি রাস্তায় ধরে আনবি
আর একটা কচি মনের নারীদেহকে...
আবারও তৃপ্তি পাবি, উল্লাসে মেতে যাবি সব ভুলে...
তবে, একদিন শেষ হবে, তুইও পাপের সীমা অতিক্রম করবি
পাপ ছুঁয়ে যাবে তোর বাঁচানো পরিবারেও
তখন রেহাই পাবিনা তুই... কেঁদেও ছাড়া পাবি না
ডুবে যাবি পাপের সাগরে, আরো অতলে
তুলে আনবে না কেউ, ওটাই তোর শাস্তি হবে!
পাপের বিনাশ যে যুগ পাল্টালেও নিয়ম বদলায় না!

অলংকরণ - আইন এম