শহরে আগুন

চিন্ময় বসু



আকাশে জেগে কিছু গির্জা
আর মন্দিরের চুড়ো,
আর কিছু নেই— সব গ্যাছে পুড়ে,
জননেতার গরম বুলিতে ছারখার
গলি রাস্তা বাড়ী ঘর সব কিছু সব কিছু।
আর আমি পুড়ে যাওয়া শহরের
মৃত্যুর ইতিহাস লিখেছি গলিত চর্বিতে।
এক অসহায় মোমবাতির ধোঁয়াটে অশ্রুতলে মোমের থেকেও ঘন ভাষায়
আমি ছিঁড়ে যাওয়া তারের মত
বিশ্বাসের কথা বলেছি।

গল্পের এবড়ো খেবড়ো নুড়িপাথরের
উপর সারাদিন ঘুরে ঘুরে
মিথ্যুক দেওয়ালের সামনে
দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শুধুই
চমকিত আর মর্মাহত হওয়া।
টিয়ার মাথাখোঁড়া চড়া ডাক
আকাশে পাথর ভাঙ্গে।
এত আগুনের মধ্যেও
দিব্বি সাদা তুলোর গাঁটরির মত
মেঘগুলো ফেটে ছড়িয়ে যায় আকাশে।
যীশুর পায়ে হাঁটা ধোঁয়া ওঠা
সমুদ্রের বুক নিয়ে আমি ডুকরে বলি
কাঠের জগত যদি ব্যর্থ হয়ে যায়
তো মানুষ কেন মোমের মত
গাঢ় অশ্রু ঝরিয়ে কাঁদবে।

এ শহরে কাগজই গাছের পাতা,
কিন্তু পাহাড়, সে তো অটুট বিশ্বাসের
মত আজো খাড়া থাকে, আছে।
ক্লান্ত চরণ বালকের কাছে
সবুজ পাতার মত হল সবুজ নিশ্বাস
যাতে মৃত ভালবাসা প্রাণ পায়।
যত মৃত্যু আর দীক্ষার আশীর্বাদে জেগে
খুঁড়িয়ে চলে, বয়ে চলে এ পোড়া শহর।

অলংকরণ - প্রমিত নন্দী