উৎসব ১৪২৭


 

প্রচ্ছদ— পার্থ মুখার্জী

সম্পাদকের কথা

প্রিয় পাঠকবন্ধুরা,

সময়ের চাকা ঘুরতে ঘুরতে কেমন করে যেন আস্ত একটা বছর পেরিয়ে আবার পুজোর ঢাকে কাঠি পড়ে গেল। কিন্তু এই বছরটা তো আর যেমন-তেমন বছর নয়— এ হল ২০২০! গোটা পৃথিবী জুড়ে প্রতিটা মানুষ ঘরে-বাইরে লড়ে চলেছে এক অদৃশ্য শত্রুর সঙ্গে— কেউ বলে করোনা ভাইরাস, কেউ বলে খিদে। কিন্তু লড়াইটা সবার জীবনেই চলছে। তবে আশার আলোও ফুটতে শুরু করেছে একটু একটু করে, সংক্রমণের উর্দ্ধমুখী রেখা নুয়ে আসছে মানবপ্রাচীরের বুকে ধাক্কা খেয়ে— হয়তো খুব শিগগিরই ভ্যাকসিনও আবিষ্কার হয়ে যাবে এই অজানা শত্রুর মোক্ষম জবাব হিসেবে।

সেবারও আগুন জ্বলেছিল ● সহস্রাংশু গুহ


 

টিল, বড়ই জটিল মানুষের চিন্তাধারা। শৃঙ্খলার নাগপাশে নিষ্পেষিত হয়েও বারংবার সে ছুটে যেতে চায় মুক্তির সন্ধানে। আক্রমণাত্মক শ্বাপদের সম্মুখে স্থাণুবৎ মার্জার থেকেও মানুষের চিন্তাধারায় প্রবাহিত হয় ভয়কে জয় করবার বাণী। যে কাহিনী আজ ব্যক্ত করতে বসেছি তারও উত্থান এমনই এক চিন্তাধারা থেকে। যে নায়কের মস্তিষ্কে সেই চিন্তাধারার উন্মেষ হয়েছিল, ইতিহাস সেই নায়ককে ঠেলে দিয়েছে বিস্মৃতির অন্ধকারে। এই এক বড় দোষ ইতিহাসের। উজ্জ্বল নক্ষত্র নিকটবর্তী হলে তা যেমন ম্লান করে দেয় উজ্জ্বলতর কিন্তু দূরবর্তী নক্ষত্রকে ঠিক তেমনি বিবিধ নায়কের কাহিনী মনে রাখতে গিয়ে ইতিহাসের পাতা থেকে কোন অন্ধকারে হারিয়ে গেছে একদা দেব জ্ঞানে পূজিত আমাদের কাহিনীর নায়ক।

বৃক্ষমানবী ● পৃথ্বীশ গজী


 

স্পেসশিপটা নিয়ে নিচের দিকে নামতে নামতে অ্যারনি বুঝতে পারলেন তাঁর ধারণাই ঠিক। এই নীল রঙের গ্রহটাতে যে প্রাণের উদ্ভব হয়েছে, সেটা বলে দেয় সমুদ্রতীরে সার বেঁধে দাঁড়ানো গাছগুলো। এই গাছগুলো তাঁর অচেনা। চোখের দৃষ্টিকে নিচের দিকে আরও অনেক দূর অবধি প্রসারিত করলেন অ্যারনি। আগে এই কাজটার জন্যে স্পেসশিপের অত্যাধুনিক দূরবীক্ষণ যন্ত্রটার সাহায্য নিতে হলেও, এখন খালি চোখে ওই যন্ত্রের থেকে বেশি পরিষ্কার দেখতে পান তিনি। সমুদ্রের গা ঘেঁষে কয়েক হাজার বর্গ কিলোমিটার জুড়ে যে বিশাল স্থলভাগ তাঁর নজরে পড়ছে সেটার পুরোটাই সবুজে মোড়া। বেশ কিছু বিশালাকৃতি ভয়ংকর জীব সেই অরণ্যে ঘুরে বেড়ালেও তাদের দেহের তুলনায় মাথাটা নেহাতই ছোট। মস্তিষ্কের চর্চা তার মানে এদের মধ্যে নেই! তাছাড়া এই বিস্তৃত অঞ্চলের কোথাও চোখে পড়ছে না সভ্যতার বিন্দুমাত্র নিদর্শন।

নিউ বেঙ্গল ● সুমিত বর্ধন


 

না। বেশি ফেনাব না। এই গল্পটা হয়ত আপনি পড়ছেন লোকাল ট্রেনের হ্যাণ্ডেলে ঠেস দিয়ে, স্টেশন এলেই একটু বাদে নেমে পড়তে হবে। কিম্বা হয়ত অফিসের লাঞ্চ ব্রেকে খেতে খেতে গল্পটায় চোখ বোলাচ্ছেন। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই আবার বসতে হবে কাজে। অথবা হয়ত আর খানিক বাদেই আপনি কোনো জরুরী দরকারে বাইরে যাবেন। তার মধ্যে যেটুকু পড়া যায় পড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।

মানে মোদ্দা কথা, আপনি বা আপনাদের হাতে সময় সীমিত। সাধারণত কাহিনিতে যেভাবে রসিয়ে রসিয়ে বর্ণনা, চরিত্র চিত্রণ কিম্বা পটভূমিকা লেখা হয় সেই সব পড়ার মত আপনার বা আপনাদের এই মুহূর্তে ধৈর্য নেই।

পোকা ● ঋজু গাঙ্গুলী

 


 

“সুলু সাগরের ঝড় নিয়ে কেউ কাব্য-কবিতা লেখেননি। আসলে লেখার জন্য বেঁচে থাকলে তো! আমাদের জাংক যেভাবে খেলনার মতো ওঠানামা করছিল তাতে আমারও মনে হচ্ছিল— অদ্যই শেষ রজনী, থুড়ি দিন। ঠিক কোথায় আছি, এমনকি কত ঘণ্টা ধরে এই ঢেউ আর বৃষ্টির মধ্যে জাহাজ বাঁচানোর চেষ্টা করছি— খেয়াল ছিল না। কুচকুচে কালো মেঘে ঢাকা আকাশের বুক চিরে বিদ্যুতের ঝলক আশপাশ সাদা করে দিচ্ছিল মাঝেমধ্যেই। কিন্তু তাতেও জল ছাড়া কিছুই নজরে পড়ছিল না!

পাত্রী ● অভিষেক সেনগুপ্ত

 


 

লিলির মুখের দিকে আকুলভাবে তাকাল প্রভাত। মেয়েটা তার উল্টোদিকে দাঁড়িয়ে। বেশ লম্বা। ছিপছিপে চেহারা। পাকা গমের মতো গায়ের রঙ। শান্ত সমুদ্রনীল দুটো চোখ আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে ওকে। ছোট্ট কপালে একমুঠো কুচো চুল পড়ে। ভ্রূ দুটো যেন কোনো তিরন্দাজের হাতের ধনুকের মতো। এই বুঝি রিলিজ করবে। তীক্ষ্ণ নাক। পাতলা গোলাপি ঠোঁটের তলায় ঢেউ তোলা চিবুক।

নীল পাপড়ি ● রনিন


 

 

খোলা বারান্দা।

ওখানে দাঁড়ালে পাখির চোখের ঔদ্ধত্য পাওয়া যায় না। আতস কাচের ধারালো পর্যবেক্ষণ পাওয়া যায় বরং। ধুলো ধোঁয়া আর ধূসর কদর্যতা। হাভাতে গেরস্থের দীনহীন পাঁচফোড়ন, রাত বিরেতের মত্ত ঝগড়া, প্রতিবেশীর সোমত্ত বৌয়ের সঙ্গে প্রৌঢ়ের চোখাচোখি, কাকভাঙা ভোরে ছেলের পিঠে মায়ের বেলন ভাঙার শব্দ— সব এসে ভিড় করে ওই দুই ফুট বাই চার ফুট ভাসমান জায়গাটাতে। নিজেকে দুঃস্থ দরিদ্রের ঈশ্বর বলে ভ্রম হয়। মনে হয় যেন একরাশ চলমান ছায়াছবির সামনে দাঁড়িয়ে আছি অনন্তকাল ধরে। হাঁফ ধরে। বিরক্তি জড়ো হয় মনের কোণে। ক্লান্তি ভর করে চোখে। এই বারান্দা আসলে একটা বেড়া। গণ্ডি। সীমানার ওধারে একটা গোটা পৃথিবী। ওই পৃথিবীতে থাকে ‘ওরা’।

হর্ষ মঞ্জুষা ● দেবদত্তা বন্দ্যোপাধ্যায়

 


 

(১)

ফুলে ফুলে সাজানো রাজঅন্তঃপুরের উদ্যানে বাটি, দোলনায় বসে এক সদ্য কিশোরী। তাকে দোল দিচ্ছে এক কিশোর। আরেক যুবক ধনুর্বাণ নিয়ে ব্যস্ত।

—“যুবরাজ, আমায় ঐ কিংশুক পুষ্পের গুচ্ছ নামিয়ে দেবেন। মালা গাঁথব।” আবদারের সুর কিশোরীর কণ্ঠে, সে যুবরাজের আদরের ভগিনী। তার আবদারে শরযোজনা করে যুবরাজ। সবচেয়ে নিচের শাখাটিতে শর নিক্ষেপ করতেই কয়েকটা কিংশুক খসে পড়ে নিচে।

পৈশাচিক ● অনুষ্টুপ শেঠ


 

 

দূরে আকাশের গায়ে নন্দাকোটের চূড়াগুলো সবে লাল থেকে কমলা হচ্ছিল।

দেবদারু পাইনের পাতা ছুঁয়ে ছুঁয়ে, পাথরের টালি বসানো অসমান চালগুলোর উপর মধুরঙের আলো ছড়িয়ে পড়ছিল। হাওয়া চলছে আজ খুব, বরফিলা ঠান্ডা শরীরের খোলা অংশগুলোয় কামড় বসাচ্ছে।

বাড়ির বাইরের বেঞ্চটায় উবু হয়ে বসে, ধোঁয়া ওঠা চায়ের গ্লাসটা দুহাতের মুঠোয় চেপে ধরে সমস্ত উত্তাপ শুষে নিতে চাইছিলেন রাঘব। পঞ্চান্ন পেরোনোর পর থেকেই শরীরে বয়সের ছাপ টের পান আজকাল, ঠান্ডা বেশি লাগে যেন এখন।

লম্বা চুমুক দিয়ে আয়েসে চোখ বুঁজে এসেছিল। পরক্ষণেই আঁতকে উঠে চোখ খুলতে বাধ্য হলেন। আরেকটু হলে গ্লাসটা হাত থেকে পড়ে যাচ্ছিল।

রানি হওয়ার গল্প ● সৌম্য সুন্দর মুখোপাধ্যায়


 

 

ষোলোশো ছয়ের লন্ডন। বসন্ত বিদায় নিচ্ছে, কিন্তু ইংল্যান্ডের বাতাসে এখনও দিব্যি উষ্ণতার স্পর্শ পাওয়া যায় দিনের বেলাটুকুতে। রাতের দিকে অবশ্য হিমের দাঁত ভালই কামড় বসায় শরীরের খোলা অংশগুলোয়। তখন চাই মদ। শহরের এল-হাউসগুলোয় ভিড় জমায় অভিজাত রাজপুরুষ থেকে অভিনেতা, মাতাল, জুয়াড়ি, গাঁটকাটা সবাই।

উইলিয়াম অবশ্য শুঁড়িখানায় ছিলেন না। তাঁর বাড়ির নিভৃত ঘরটিতে মোমের আলোয় একখানা মস্ত বইতে বুঁদ হয়ে ছিলেন তিনি। হলিনশেডস ক্রনিকলস। বাইরে রাস্তায় একদল মাতাল হইহল্লা করতে করতে যাচ্ছে। ওদের চিৎকারে একটু বিরক্ত বোধ করলেন তিনি।

দরবারি দাওত ● কর্ণ শীল


 

 

সে এক যুগ ছিল বটে! আমিনুল্লাদাদু দাড়ি নেড়ে নেড়ে দাওতের গল্প বলতো। কানাইয়ের সন্ধ্যাবেলার কাজগুলির মধ্যে প্রধান ছিল আমিনুল্লাদাদুর তামাক সেজে দেওয়া। তারপর সে দেউড়ির বাতিগুলি জ্বেলে, কাশীদাসি নিয়ে বসতো। যে চশমাটি এঁটে নিত চোখে, তার একটিতে আবার কাচ ছিল না। তার নাকি একচোখোমি আছে, মানে এক চোখেই কম দেখে।

অতশত বুঝতাম না। তখন আমিনুল্লা বুড়ো ঝাঁপি খুলেছে বসেছে আর তার ভেতর থেকে ভুরভুর করে জাফরানি পোলাও, গোলাপ পাপড়ি দেওয়া পায়েস আর রামকৃষ্ণ ঘোষের হাঁড়ি - দইয়ের গন্ধ বেরোতে লেগেছে।

বজ্রের তিন যোদ্ধা ● স্ট্যানিস্লাভ লেম ● অনুবাদ: দীপ ঘোষ


 

 

জ তোমাদের এক অনেক দূরের আকাশের গল্প বলি। সেই জগতে বহু বছর আগে এক নামকরা বৈজ্ঞানিক ছিলেন। তিনি সারাদিন যত অদ্ভুত সব যন্ত্র বানাতেন। তাঁর সাথি ছিল একটা ছোট্ট যন্ত্র যে সুরেলা গলায় গান শোনাতো তাঁকে। তিনি সেই যন্ত্রটার নাম দিয়েছিলেন ‘পাখি’। বৈজ্ঞানিকের চিহ্ন ছিল একটা হরতনের টেক্কা, আর তাঁর তৈরি ছোট বড় সব যন্ত্রতেই থাকত এই প্রতীক। অনেক বছর পরে অন্যরা যখন অণু পরমাণুর দুনিয়ায় পা রাখল, অবাক হয়ে দেখল তারা সেখানেও ভালোবাসার চিহ্ন রেখে গেছেন প্রাজ্ঞ তপস্বী। অনেক অদ্ভুত কল কবজা তৈরি করলেও তাঁর জীবনের অন্যতম সেরা কাজটি ছিল জীবন ও মৃত্যুকে এক সুতোয় বাঁধা।

স্বস্তি পেলেন বিজয়কেতন ● ধূপছায়া মজুমদার


 

(১)

ছোটগোবিন্দপুরের প্রাক্তন জমিদারবাড়ি ‘নন্দন কানন’-এর বর্তমান গৃহকর্তা হলেন বিজয়কেতন রায়। নাম শুনে মনে হতেই পারে ভদ্রলোকের প্রতাপে চোরে পুলিশে চায়ের দোকানে একমাথা হয়ে আড্ডা মারে। কিন্তু না, সে রামও নেই, সে অযোধ্যাও নেই। সে ছিল বিজয়কেতনের বাবা অরূপরতন রায়ের আমলে, স্বর্ণযুগে। এ গাঁয়ে তখন চোর ছিল বাড়ন্ত, পাশের গাঁয়ের কোনো চোর যদি রাতের আঁধারে জায়গা ঠাহর করতে না পেরে গাঁয়ের কারও উঠোন থেকে বালতি তুলে ফেলতো, তবে পরেরদিন সক্কাল সক্কাল অনুশোচনায় জর্জরিত হয়ে থানায় গিয়ে বালতি সমর্পণ করে আসতো। একসময় ভাবা হয়েছিল পুলিশের পক্ষ থেকে অরূপরতনকে কোনো অনারারি পোস্ট দেওয়া হবে, নানান ডিপার্টমেন্টাল গেরোয় সে আর হয়নি। তা সেসবই এখন ইতিহাস।

শেষ থেকে শুরু ● সপ্তর্ষি চ্যাটার্জী


 

 

বিশ্বের একেবারে অন্তিম প্রান্তে একটি রেস্তোরাঁ আছে। হ্যাঁ হ্যাঁ, আমি আমাদের বিশ্বের কথাই বলছি। তার বাইরে কী আছে? আদৌ কিছু আছে? আছে বইকি। আরও অজস্র সমান্তরাল বিশ্ব। প্রমাণ দিতে পারব না বাপু। চাইলে নিজে গিয়ে দেখে আসলেই হয়। এই থাকা না থাকার ব্যপারটা বড়ই গোলমেলে। আপাতত রেস্তোরাঁটার কথা বলি। অদ্ভুত দেখতে সেটা। বাইরে থেকে দেখলে মনে হবে যেন কোনো সমুদ্রশঙ্খ হঠাৎ প্রবল প্যাঁচ কষতে কষতে মহাশূন্যের কোনো অজানা গহ্বরে বিলীন হয়ে গেছে। শুরু আছে তো শেষ নেই। ওটার নাম মধ্যান্তর। মহাশূন্যে ভ্রমণের ফাঁকে বিভিন্ন প্রাণী সেখানে মধ্যাহ্নভোজন সারতে আসে।

জাল ● তমোঘ্ন নস্কর


 

 

স্কচ এর গ্লাসে চুমুক দিতে দিতে গান শুনছিলাম রোজকার মত। এই সময়টা একান্তই আমার। একটা ভালো গজল আর একটু মদ্যপান। ফেলে আসা সময়ের স্মৃতিচারণ করি এইসময়।

খুট করে আওয়াজটা হতেই পিছন ঘুরলাম। হলদেটে আলোয় এক ভদ্রলোককে দেখা যাচ্ছে। বেশ ধোপদুরস্ত চেহারা, কোট প্যান্ট পরা, চমৎকার ব্যাকব্রাশ চুল। তবে মুখখানায় শেয়ালের মত বেশ খানিকটা দম্ভ আর কৌতুক মিশে আছে, সাধারণ ফ্রি হ্যান্ড করা চেহারা। আর তার হাতে একখানা…

ড্রাকুলার অতিথি ● ব্রাম স্টোকার ● অনুবাদ: সুদীপ দেব


 

 

মাদের যাত্রা শুরুর সময়তেও ম্যুনিখের আকাশ ছিল পরিষ্কার। উজ্জ্বল সূর্যালোক আর মনোরম বাতাসে ছিল গ্রীষ্মের আগমনবার্তা।

আমরা রওনা হওয়ার ঠিক আগে আমি যে হোটেলে উঠেছিলাম সেই কোয়াটার জিস্যাঁস-এর মালিক হের ডেলব্রোক তাড়াহুড়ো করে নেমে এগিয়ে এলেন। আমাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে কোচোয়ানকে বললেন, “সন্ধে নামার আগে ফিরে এসো মনে করে। আকাশ পরিষ্কার থাকলেও মাঝে মাঝে উত্তুরে হাওয়ার ঠান্ডা ঝাপটা দিচ্ছে। হঠাৎ ঝড়টড় উঠতে পারে।” এরপর একটু হেসে বললেন, “আমি জানি তোমার দেরি হবে না। কারণ আজকে রাতটার বিশেষত্ব নিশ্চয়ই মনে আছে তোমার।”

বসন্ত এসে গেছে ● ফিলিপ কে ডিক ● অনুবাদ: বিশ্বদীপ দে


 

 

সুন্দরী জিল হেরিকের নীল চোখ দু’টো ভরে আছে জলে। স্বামীর দিকে ঘৃণাভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে সে তীক্ষ্ণ স্বরে চি়ৎকার করে উঠল, ‘‘তুমি... তুমি একটা জঘন্য মানুষ।’’

লেস্টার হেরিক নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে কাজ করে যাচ্ছিল। নিজের মনে সমস্ত নোট, গ্রাফ ইত্যাদি সে ঠিক ভাবে সাজিয়ে রাখছে।

‘‘জঘন্য!’’ জিলের কথাটারই পুনরাবৃত্তি করে সে নির্লিপ্ত স্বরে বলল, ‘‘নিজের বোধবুদ্ধি অনুযায়ী একটা মন্তব্য করে দিলে, যার কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।’’ এক বিশেষ শ্রেণির পরজীবীদের জীবন সম্পর্কে গবেষণার টেপ ডেস্ক স্ক্যানারের সাহায্যে পাঠিয়ে দিয়ে সে জানাল, ‘‘স্রেফ আবেগে ঠাসা মন্তব্য। আর কিস্যু না।’’

ঘরে ফেরার গান ● দেবলীনা চট্টোপাধ্যায়

 


 

“এ এন টি ওয়ান জিরো নাইন ফোর।”

শ্রান্ত গলায় কোডটা আউড়েই নরম গদিওলা চেয়ারে শরীর এলিয়ে দিল অন্তু। উফ্, আজ ভীষণ ধকল গেছে। এই মুহূর্তে একটা নীলাভ আলো তার সারা শরীরের ওপর খেলে বেড়াচ্ছে। স্ক্যান শেষ হলে নিজের মালিকের ব্যাপারে নিশ্চিন্ত হল ব্রহ্মাণ্ডযান, নড়তে শুরু করল আলতোভাবে। খ্যাঁচ্। মৃদু আওয়াজ শুনে অবসন্ন চোখের পাতা দুটো আস্তে আস্তে খুলল ব্রহ্মাণ্ডযানের একমাত্র যাত্রীটি। একটা লিকলিকে ধাতব হাত সামনের কন্ট্রোল প্যানেল থেকে বেরিয়ে এসে তার মুখের সামনে ধরে আছে দুটো ট্যাবলেট।

ডেড কল ● উইলিয়াম এফ. নোলান ● অনুবাদ: তানভীর মৌসুম


 

 

লেনের মৃত্যুর একমাস পর ফোনটা বেজে উঠল।

মাঝরাত। প্রচণ্ড ঠান্ডা পড়েছে। কল রিসিভ করার জন্য ঘুম থেকে উঠতে হল। হেলেন এই সপ্তাহে বাড়িতে নেই। আমি বাড়িতে একা।

‘হ্যালো।’

‘হ্যালো, ফ্র্যাঙ্ক।’

লাল নীল সবুজের মেলা ● রাকেশকুমার দাস


 

 

সে বছর শরৎকালের আকাশে পেঁজা তুলোর মতো মেঘে মেঘে নোংরা হয়ে যাওয়া নীল আকাশে দেখা গেছিল বিশাল ভিনগ্রহী স্পেস-শিপটা। আধ-মাইল চওড়া একটা লাট্টুর মতো গোলচে একটা জিনিস আকাশে ঘুরছিল। গায়ে কীসব রঙিন আঁকিবুঁকি ছিল। তাই স্পেস-শিপটা যখন ঘুরছিল, পুরো আকাশ জুড়ে লাল, নীল, সবুজ সমস্ত রঙের রামধনুর মতো নানারঙের হিজিবিজি তৈরি হচ্ছিল।

অভিমন্যু ● সায়ন্তনী পলমল ঘোষ

 


 

ছেলেটা চারিদিকে একবার তাকাল। নাহ, এই মুহূর্তে হাইওয়েতে সে আর তার সোলার সাইকেল ছাড়া আর কোনো দ্বিতীয় ব্যক্তি বা বস্তুর অস্তিত্ব নেই অর্থাৎ তাকে কেউ লক্ষ্য করবে না। দু কিলোমিটার অন্তর নজরদার ক্যামেরা লাগানো আছে কিন্তু তার হিসেব মতো এই জায়গাটা দুদিকের দুটো ক্যামেরার দৃষ্টিসীমার বাইরে।

হাই মাইলেজ ● জেজি ফ্যাহার্টি ● অনুবাদ: মো. ফুয়াদ আল ফিদাহ


 

 

‘কেমন? চলে?’ বিয়ারের বোতলে চুমুক দিতে দিতে বলল বব হ্যারিসন, মুখে দুষ্টুমির হাসি।

ঈর্ষা বোধ করল সিড চেম্বারস, কিন্তু সেটা দেখাল না। উল্টে শিস বাজিয়ে বলল, ‘দারুণ।’

‘হ্যাঁ, গতকালই পেয়েছি। দ্য ডব্লিউ-৯, বিক্রেতা আমাকে ভালো ছাড় দিয়েছে। পুরো ছয় হাজার কম নিয়েছে সে!’

গোলকধাঁধা ● অর্ঘ্যজিৎ গুহ


 

 

“আসতে পারি কমরেড?” এই বলে হাসি মুখে চেম্বারে মুখ বাড়ালেন ডক্টর সেরগেই গুস্তভ, রুশ সেনাবাহিনীর অভিজ্ঞ মনোবিদ।

পিছন ফিরে জানলাটার দিকে মুখ করে বসেছিলেন কমরেড ইগর চেভক্সকি, জানলার বাইরে দিয়ে উপকূলটা পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে এই রাতের বেলাতেও, বেশ লাগে ওনার এভাবে তাকিয়ে থাকতে, একটু একটু মেঘ জমছে কি আকাশে?

ইবাইজা মেশিন ● রুশদী শামস


 

 

ক্রিরি তার হাতে একটি সোনালি রঙের হাতঘড়ি ধরে আছে। এখন দেখতে হবে তাদের পরীক্ষাটা ঠিকঠাক মতো হল কি না। যদি সবকিছু পরিকল্পনামাফিক হয়ে থাকে, তাহলে এই ঘড়িটি এরই মধ্যে ইতিহাসের পাতায় ঢুকে পড়েছে।

ঘড়িটির দিকে অপলক তাকিয়ে থাকে ক্রিরি। সত্যিই কি ঘড়িটি পৃথিবীর সর্বপ্রথম সফলতার সঙ্গে টেলিপোর্ট হওয়া জিনিস?

মৃত্যুমুঠোভাষ ● সোহম গুহ


 

 

১.

লকাতার এই অঞ্চল গ্যাজেটের বিক্রিবাট্টার চাপে সদাই চির ব্যস্ত। সেই কম্পিউটারের পার্টস, মোবাইল, এসি, ফ্যান এবং আরও অনেক কিছুর মাঝে ভিড় ঠেলে এগোচ্ছিল ও, গরমের ঝাঁঝে গলদঘর্ম হয়ে। বর্ষাকাল খাতায়কলমে শুরু হলেও মেঘ বাবাজির দেখা নেই।

পকেট থেকে রুমাল বার করে ঘাড় মাথা মুছতে গিয়ে পাশের দোকানের শোকেসে নজর পড়ল তানিয়ার। সেকেন্ড-হ্যান্ড দোকানের বুড়োটে সেটগুলোর মাঝে সেটা এক বেমানান একলা সৈনিকের মত তাকে বসে। ভেতরে ঢুকে দোকানদারকে দিয়ে ঝাঁ-চকচকে অ্যানড্রয়েড সেটটা নামাল ও। ফোনটা শুধু দেখতেও না, কাজেও বেশ ভাল; তার উপরে লেটেস্ট অ্যানড্রয়েড ওএস লাগানো। একবার নেড়েঘেঁটে দোকানিকে দাম জিজ্ঞেস করল তানিয়া। ভদ্রলোক কিছুটা আশ্চর্যই হলেন।

অ্যাডভাইসস্কোপ ● শিমুল মন্ডল


 

 

১।।

ক্টোবর মাসের মধ্য দুপুর, একটা বাজে রকমের ভ্যাপসা গরম পড়েছে চারিদিকে। এই দুপুর রোদে প্রফেসর সদবুদ্ধি অ্যাডভাইসস্কোপ নামক তাঁর আবিষ্কৃত নতুন যন্ত্রটা পকেটে নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। প্রফেসর সদবুদ্ধি নামটা একটু অদ্ভুত হলেও এটাই তাঁর পিতৃপ্রদত্ত নাম। ছোটবেলায় তাঁর বাবা আশা করেছিলেন এই ছেলে বড় হয়ে দেশের ও দশের অশেষ উপকার সাধন করবে, মানুষকে সদবুদ্ধি দান করবে, তা বাবার সেই আশা কিছুটা অবশ্য তিনি পূরণ করেছেন।

মায়াজীবী ● জাকিউল অন্তু


 

 

রাবরই একা থাকতে পছন্দ করি আমি। আমার যা কাজের ধরণ তাতে একা থাকার প্রয়োজনীয়তা আছে। এই যেমন আজকেই একা একা বসে আছি সমুদ্রের তীরে। সাধারণত পরিবার বা সঙ্গীদের নিয়েই মানুষ বেড়াতে যেতে পছন্দ করে কিন্তু একবার সোলো ট্রিপের মজা পেয়ে বসলে সে এই স্বাধীনতার স্বাদ জীবনেও ভুলবে না। একা একা ঘুরতে ঘুরতে সমস্ত জগতকে ভুলে যাওয়া। হতাশ জীবনের কঠোর দায়িত্বগুলো থেকে কিছু মুক্তি তো পাওয়াই যায়। এইজন্য টুরিস্ট আর ট্রাভেলারদের মধ্যে একটা সূক্ষ্ম পার্থক্য থাকে। একদল সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়, আরেক দলের সাধারণত কোনো গোছানো অ্যাকাউন্টই থাকে না।

সাইরেন ● পরাগ ভূঞ্যা


 

 

‘আজ আকাশ অংশত মেঘলা থাকবে। বিকেলবেলায় বজ্রবিদ্যুৎ সহ ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা...’

“ভাই রেডিওতে কেউ নিউজ শোনে? একটু পরে কি শ্যামা সংগীত চালাবি? ধুর তখন থেকে খালি তোর মান্ধাতা আমলের রুচি, জাস্ট নিতে পারছি না। বিট বালা গান লাগা। আছে, না ব্লুটুথ অন করব?” গাড়ির পেছন থেকে শঙ্খ বলে ওঠে।

অন্তিম ন্যায় ● এরশাদ বাদশা


 

 

এক

নিজের শরীরটা স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি ভারী মনে হচ্ছে দীপ্তর। আরাম-আয়েশের ভোগ-বিলাসী জীবনটা হঠাৎ এমনভাবে বদলে যাবে, কখনও কল্পনাও করেনি। অবশ্য তা’ মাত্র তিনমাসের জন্যই, হেসে ভাবল। নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে দু’মাস ছাব্বিশ দিন। তবে এই ক’দিনেই জানা হয়ে গেছে মুদ্রার ওপিঠ কীরকম হতে পারে। ভাবতেই গায়ে কাঁটা দিচ্ছে!

বুড়িগঙ্গার বুকে ● সুমন মিশ্র


 

এক

বুড়িগঙ্গার বুকে মন্থর গতিতে এগিয়ে চলেছে একটি জলযান। আলো আঁধারির মিহি আস্তরণের ঘেরাটোপে সেটি অস্পষ্টভাবে দৃশ্যমান। প্রথম দর্শনে কোনো বড় ব্যবসায়ীর বজরা বলে ভুল হতে পারে, কিন্তু একটু ভাল করে খেয়াল করলেই বোঝা যাবে এই জলযানের পরিচয় অতটা সাধারণ নয়। এটি নবাবি ময়ূরপঙ্খী বজরা, যার উপরে পতপত করে উড়ছে বাংলা বিহার উড়িষ্যার নবাবের বিজয় পতাকা। বিজয় পতাকাই বটে! তবে তা কলঙ্কিত, রক্তাক্ত।

দুঃস্বপ্ন ● প্রলয় কুমার নাথ


 

 

(১)

“অমাবস্যার গাঢ় অন্ধকার ঘনিয়েছে চারিদিকে... উত্তর দিক থেকে বইতে শুরু করেছে হাড় হিম করা ঠান্ডা বাতাস। দিগন্ত বিস্তৃত ধুধু বন্যপ্রান্তর এবং দূরে আকাশ ছোঁওয়া বরফে ঢাকা পাহার চুড়ার মাঝে অল্প একটু এবড়ো খেবড়ো পাথুরে জমি। জংলি গাছের কাঠ দিয়ে তৈরি খাঁচায় যেন বন্দি হয়ে রয়েছি আমি! সামনে জ্বালানো একটি অগ্নিকুণ্ডের ভেতর এক নাগাড়ে কী যেন গুড়োগুড়ো পদার্থ ছুঁড়ে যাচ্ছে একটি অদ্ভুত চেহারার লোক...তার পরনে লাল জোব্বা, মাথার জটাটা পাগড়ির মত পেঁচানো, গলায় নানা পাথরের মালা...কেমন যেন বিকট একটা গন্ধ বেরচ্ছে সেখান থেকে!

ডাইরি অভ অ্যান অ্যাসকান: আ মার্ক ওয়াটনি শর্ট স্টোরি ● অ্যান্ডি উইয়্যার ● অনুবাদ: তানজিরুল ইসলাম

 


 

১৩ই নভেম্বর

 

হা ঈশ্বর! সত্যিই? হা ঈশ্বর!

হা...

ঈশ্বর...

প্রিজম ● অনিন্দ্য রাউত


 

 

৷৷ ১ ৷৷

রজা বন্ধ হতে রেডিও থেকে ভেসে আসা গানটিও, “জীবনে কী পাবো না, ভুলেছি সে ভাবনা…” ধীরে ধীরে স্তব্ধ হয়ে গেল।

চিঠিটা খোলে টমাস। ওর খুব ঘুম পাচ্ছে। চিঠিটা এখন পড়বে ও? না, কাল পড়লেও হয়? চিঠিটা কবে পেয়েছে ও? মনে করতে পারে না কিছুতেই। আসলে মাথাটা যন্ত্রণায় ছিঁড়ে যাচ্ছে। এটা কি খিদের জন্য? আজ কার জানি আসার কথা ছিল ওর কাছে! রোজ দরজা খুলে কে যেন আসে, আবছা দেখতে পায় তাকে। বলেছিল খাবার আনবে, এলো না তো! কথা দিয়ে কথা রাখে না কেন মানুষ? কিন্তু কে? কে কথা রাখেনি? খুব মনে করার চেষ্টা করে, কিন্তু মনে পড়ে না। ওর ভেতরটা গুলিয়ে যাচ্ছে আবার।

Tri-মাত্রিক ● সৌরভ ঘোষ


 

 

যে পৃথিবীর মায়ায় লালিত হয়েছে এই মানব সভ্যতা সেই আদিম, অকৃত্রিম সৃষ্টিকে জানতে মানুষ বারেবারে আশ্রয় নিয়েছে বিজ্ঞানের। আর যে জ্ঞানে সে যুক্তি খুঁজে পায়নি তাকে দিয়েছে অলৌকিকের তকমা। মানুষ দাম্ভিক। তার দম্ভ চিরকাল তার এই স্থূল, জৈবিক আবরণ নিয়ে। এদিকে বয়স ছাড়া এই দেহঘড়ির সময় মাপার যন্ত্র বিকল। কিন্তু মানুষ? সে ঈশ্বরের দানকে প্রশ্ন করে এসেছে সেই আদি-অনন্ত শিশুসময় থেকে। যৌবন পরবর্তী জরাই কি জীবনের শেষ দশা? নাকি সেটা মুক্তির অন্য আরেক মাত্রার নাম?

স্বর্ণভূমির সন্ধানে ● সায়নদীপা পলমল


 

 

“কাপ্তান!”

এই রাতে দরজার কাছ থেকে আচমকা ফ্যাসফ্যাসে গলাটা শোনা যেতেই চমকে উঠলেন ‘ডানা’ জাহাজের ক্যাপ্টেন আলফ্রেড ডি সিলভা। দরজার সামনে দাঁড়িয়ে সেই লোকটা― একমুখ কাঁচা পাকা দাড়ি, মরা মাছের মত ঘোলাটে চোখ, গায়ে বিশ্রী গন্ধ আর কপালে একটা লম্বাটে ক্ষত যাকে প্রত্যেক দিন দেখলে মনে হয় যেন টাটকা― লোকটার নাম রডরিক। মাত্র একমাস আগে পর্তুগালের প্রধান কারাগার থেকে বিশেষ শর্তের বিনিময়ে ছাড়া পেয়েছে; ডাকাতি ও খুন সহ আরও না জানি কী কী সব অভিযোগে জেল খাটছিল। এমন লোক যদি এই রাতের বেলায় একলা ক্যাপ্টেনের কেবিনে আসে তাহলে ক্যাপ্টেন যে প্রসন্ন হবেন না তা বলাই বাহুল্য।

সাবান ● বুম বোস


 

 

(১)

‘দাদা...ও দাদা শুনছেন! চৌরাস্তা এসে গেছে, নামুন।’ ড্রাইভারের ডাকে ঘুমটা ভেঙে গেল আমার। চশমাটা খুলে চোখ দুটো বার কয়েক কচলে নেমে পড়লাম গাড়ি থেকে। ড্রাইভারকে ভাড়াটা মিটিয়ে দিয়ে ফুটপাতে নেমে হাঁটতে শুরু করলাম।

অফিস থেকে ফেরার পথে শাটলে ঘুমিয়ে পড়াটা ইদানীং প্রায় নিত্য অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। তারপর যদি আবার উইন্ডো সিট হয়, তাহলে তো আর কথাই নেই।

ডি এন এ, জিনকাটা কাঁচি আর তিন বিদুষী ● সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়

ডি এন এ, জিনকাটা কাঁচি আর তিন বিদুষী
সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়

 

কাট—ওয়ান

৯৬৮ সালে প্রকাশিত হল একটি সাড়া জাগানো বই— বেরোনো মাত্রই বেস্টসেলার। সাধারণত নোবেল লরিয়েটরা পপুলার সায়েন্সের বই লিখতে চাইতেন না, কারণ তাতে নাকি বিজ্ঞানের সঙ্গে সমঝোতা করতে হত। কিন্তু এই বইটা একটু অন্যরকম। বিশ্বের অন্যতম— হয়তবা বিংশ শতাব্দীর সর্বোতকৃষ্ট আবিষ্কারের একটা জীবন্ত দলিল।

ফ্রম মেক্সিকো উইথ লাভ ● জয়িতা সাহা

ফ্রম মেক্সিকো উইথ লাভ
জয়িতা সাহা

৯৯৭ সাল। ড্রাগযুদ্ধ আর ভূমিকম্প কবলিত মেক্সিকো তখন মাতোয়ারা জাপাতিস্টা মুভমেন্টের আলোড়নে। স্কুল কলেজ সব অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ। ফিলোসফি প্রথম বর্ষের এক ছাত্র ঠিক করলেন এই সুযোগে ইউরোপ একটু ঘুরে আসা যাক। বাবা মা দুজনেই থিয়েটারের মানুষ, তাই অভিনয়ের মঞ্চেই শৈশব কেটেছে, কিন্তু অভিনয়কে পেশা হিসেবে নেওয়ার ইচ্ছে ছিল না। লন্ডনে বার টেন্ডিং করে দিব্যি চলছিল।

মধ্যযুগীয় রান্নার পুঁথি—নিমত্‌নামা ● অরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়

মধ্যযুগীয় রান্নার পুঁথি—নিমত্‌নামা
অরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়

 

 

কটি বিশেষ গুণের জন্য বহুপরিচিত একজন মানুষ যদি সম্পূর্ণ অন্য বিষয়ে পারদর্শী হন, তবে অবাক হতেই হয়। আর যদি সেই মানুষটা দোর্দণ্ডপ্রতাপ রাজা হন, তাহলে তো কথাই নেই। শাসকের কাজ শুধু শাসন ত্রাসন। তিনি যদি বিপরীত দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে অন্য কাজে মন দিয়ে ফেলেন, যে কাজটা আদৌ তাকে সাজে না, তবে যেটা হয়, তার প্রমাণ হলেন মহম্মদ ঘিয়াসুদ্দিন শাহ, যাকে ইতিহাস ঘিয়াত শাহ্‌ বলে চেনে।

পরতে পরতে ভয় ● জুনজি ইতো ● অনুবাদ: লুৎফুল কায়সার